বর্তমান বিশ্বে যে রোগগুলো জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি স্বরূপ হয়ে দাঁড়িয়েছে তার মধ্যে ডায়াবেটিস অন্যতম। এটি কোনো জীবাণু ঘটিত বা ছোঁয়াচে রোগ নয়। শরীরের প্রয়োজনীয় হরমোন ইনসুলিনের অভাবে অথবা ইনসুলিনের কার্যক্ষমতা হ্রাস পাওয়ার কারণে এই রোগ দেখা দেয়। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে করণীয় কিছু বিষয়সমূহ অনুসরণ করা উচিত।
যারা অতিরিক্ত মোটা এবং অধিক খাদ্য গ্রহণ করেন এবং যারা কায়িক পরিশ্রম করেন না বা কম করেন তাদের এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস পূর্ব পুরুষের থাকার কারণেও হতে পারে। এছাড়া গর্ভকালীন সময়েও এই রোগ হতে পারে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার উপায় সমূহ অবশ্যই জেনে রাখা ভালো।
ডায়াবেটিসের লক্ষণ কী:
ডায়াবেটিসে বিভিন্ন লক্ষণ দেখা দেয়। তবে সবার ক্ষেত্রে কিন্তু লক্ষণ একরকম নয়। কারো কারো ক্ষেত্রে কোন ধরণের লক্ষণই থাকেনা। আবার অনেকের লক্ষণ দেখা দিলে মানতে নারাজ যে তার ডায়াবেটিস হয়েছে। ডায়াবেটিস হওয়ার প্রথমদিকেই যদি ডায়াগনোসিস করা যায় তবে রোগীর জন্য অনেক ভাল। ভবিষ্যতে জটিলতা অনেক কমে যায়। তাই ডায়াবেটিসের লক্ষণ সবারই জানা উচিত। যেমনঃ
- ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া এবং পিপাসা লাগা
- ক্ষুধা বেড়ে যাওয়া
- ক্লান্তি ও অবসাদগ্রস্ত ভাব
- মাত্রাতিরিক্ত ওজন হ্রাস
- অসাড়তা বা অবশতা
- দৃষ্টি ঝাঁপসা হয়ে যাওয়া
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া
- ঘন ঘন ইনফেকশন
- চামড়ায় শুষ্ক, খসখসে ও চুলকানি ভাব
- বিরক্তি
ডায়াবেটিসের মাত্রা বা ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল:
আগে বলা হতো,কোনো ব্যক্তির বারবার প্রস্রাব হলে সে ডায়বেটিস বা বহুমূত্র রোগে আক্রান্ত। কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে, বারবার প্রস্রাব হলেই ডায়াবেটিস না বরং বিভিন্ন উপসর্গ পর্যালোচনা করে এবং রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা পরীক্ষা করে কেবল ডায়াবেটিস রোগ শনাক্ত করা যায়। খালি পেটে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা ৭ মিলিমোল/লিটার বা তার বেশি হলে এবং খাবার দুই ঘণ্টা পর রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা ১১.১ মিলি মোল/লিটার বা তার বেশি হলে ডায়াবেটিস হয়েছে বলে ধরে নেওয়া হয়। ডায়াবেটিস মূলত ২ ধরনের।
আগে বলা হতো, কোনো ব্যক্তির বারবার প্রস্রাব হলে সে ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র রোগে আক্রান্ত। কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে, বারবার প্রস্রাব হলেই ডায়াবেটিস না বরং বিভিন্ন উপসর্গ পর্যালোচনা করে এবং রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা পরীক্ষা করেই কেবল ডায়াবেটিস রোগ শনাক্ত করা যায়। খালি পেটে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা ৭ মিলিমোল/লিটার বা তার বেশি হলে এবং খাবার দুই ঘণ্টা পরে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা ১১.১ মিলিমোল/লিটার বা তার চেয়ে বেশি হলে ডায়াবেটিস হয়েছে বলে ধরে নেওয়া হয়। ডায়বেটিস মূলত ২ ধরনের হয়ে থাকে।
টাইপ-১ বা ইনসুলিন ডিপেনডেন্ট ডায়াবেটিস মেলাইটাস যা ইনসুলিন উৎপাদন কম হলে বা না হলে দেখা দেয়।
টাইপ-২ বা নন ইনসুলিন ডিপেনডেন্ট ডায়াবেটিস মেলাইটাস যা ইনসুলিন ঠিকমত কাজ না করলে বা উৎপাদন অনুপাতে রোগীর শরীরের ওজন বেশি হলে দেখা দেয়। এছাড়াও গর্ভকালীন সময়েও রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায়। কিন্তু সন্তান জন্মদানের পর সেরে যায়। কিন্তু সচেতন না থাকলে পরবর্তীতে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
টাইপ-১ বা ইনসুলিন ডিপেনডেন্ট ডায়াবেটিস মেলাইটাস যা ইনসুলিন উৎপাদন কম হলে বা না হলে দেখা দেয়।
টাইপ-২ বা নন ইনসুলিন ডিপেনডেন্ট ডায়াবেটিস মেলাইটাস যা ইনসুলিন ঠিকমত কাজ না করলে বা উৎপাদন অনুপাতে রোগীর শরীরের ওজন বেশি হলে দেখা দেয়।
গর্ভকালীন ডায়াবেটিস এর মাত্রা:
এছাড়াও গর্ভকালীন সময়েও রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায় ফলে ডায়াবেটিসের লক্ষণ দেখা যায় কিন্তু সন্তান জন্মদানের পর সেটা সেরেও যায়। কিন্তু সচেতন না থাকলে পরবর্তীতে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
যদি নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় তাহলে ডায়াবেটিস হলে ভয়ের কিছু নেই। পরিমান মতো খাদ্য গ্রহণ, কায়িক পরিশ্রম যেমন-দৈনন্দিন নিজের কাজকর্ম, নিয়মানুযায়ী প্রতিদিন হাঁটা ও ব্যায়াম করা, আর উচ্চতা অনুযায়ী শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখা ইত্যাদি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। পাশাপাশি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন বা ইনসুলিন ইনজেকশন নিতে হবে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে খাবার:
অনেক সময় রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়েগেলে বা কমে গেলে রোগী অসুস্থ বোধ করতে পারে। সেক্ষেত্রে গ্লুকোমিটার দিয়ে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ মেপে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অনেকে ডায়বেটিস হলে খাবার একেবারেই বন্ধ করে দেয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে জটিলতা আরো বেড়ে যায়। লক্ষ্য রাখতে হবে যেন দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবারের চেয়ে প্রোটিনযুক্ত খাবারের সংখ্যা বেশি থাকে। পাশাপাশি প্রতিদিন মৌসুমি ফলের মধ্যে যে কোনো একটি ফল খেতে হবে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ব্যায়াম:
এছাড়াও ডায়াবেটিস রোগীদের হাত-পায়ের যত্ন নিতে হবে। ডায়াবেটিস রোগীদের যে কোনো ক্ষত শুকাতে সময় বেশি নেয়। তাই সতর্ক থাকতে হবে যেন শরীরে কোনো ক্ষত না হয়। ধূমপান, মদ্যপান বা সাদাপাতা-জর্দা দিয়ে পান খাওয়ার অভ্যাস পরিত্যাগ করতে হবে। দৈনিক সকালে অথবা বিকেলে ৩৫ মিনিট থেকে এক ঘণ্টা হাঁটার অভ্যাস করতে হবে। যাদের এখনও ডায়াবেটিস হয়নি অথবা রক্তের রিপোর্টে মনে হয় হওয়ার সম্ভাবনা আছে তাদের অন্তত ২ ঘন্টা হাঁটা উচিত।
প্রিয় পাঠক, আপনিও স্বাস্থ্য কথা অনলাইনের লেখক হয়ে উঠুন। লাইফস্টাইল ,ফ্যাশন, স্বাস্থ্য, ভ্রমণ, নারী, ক্যারিয়ার, পরামর্শ,খাবার,রূপচর্চা ও ঘরোয়া টিপস নিয়ে লিখুন এবং ছবিসহ মেইল করুন [email protected]এই ঠিকানায়। লেখা আপনার নামে প্রকাশ করা হবে। আমরাও আপনার উপর কৃতজ্ঞ থাকবো।