একজন মানুষের জীবনে প্রথম ১০০০ দিনে অন্য সময়ের তুলনায় মস্তিস্কের বিকাশ খুব দ্রুত ঘটে। এসময় উত্তম পুষ্টি নিশ্চিতকরণ শিশুর মেধা বিকাশে জ্বালানী হিসাবে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে।
গর্ভাবস্থায় শিশুর মস্তিস্কের বৃদ্ধি খুব দ্রুত ঘটে এবং আশ্চর্যজনক গতিতে এর বিকাশ ঘটতে থাকে। গর্ভকালীন ৪র্থ সপ্তাহে শিশুর মস্তিস্কে আনুমানিক ১০০০০ কোষ থাকে এবং ২৪ সপ্তাহে তা বৃদ্ধি পেয়ে ১০ বিলিয়ন এ পৌঁছায়। গর্ভকালীন সময়ে শিশু যে পুষ্টি উপাদান তার মায়ের খাবারের মাধ্যমে পায় তা এই আশ্চর্যজনক পরিবর্তনে জ্বালানী হিসাবে কাজ করে। বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান যেমন: ফলিক অ্যাসিড, আয়রন, জিঙ্ক, আয়োডিন, আমিষ ও ফ্যাটি অ্যাসিড গর্ভকালীন সময়ে শিশুর মস্তিস্ক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণভূমিকা পালন করে। যদি এই সময় কোন পুষ্টি উপাদানের অভাব ঘটে তবে শিশুর বিভিন্ন ধরনের ঝুঁকি যেমন: শিশুর বৃদ্ধি ব্যাহত হওয়া, জন্মগত ত্রুটি এবং মেধা বিকাশ ব্যাহত হওয়া ইত্যাদি হতে পারে।
গর্ভধারণের ১৬ দিনের মধ্যে শিশুর নিউরাল টিউব গঠিত হয় এবং সাত মাসের মধ্যে শিশুর মস্তিস্ক এমনভাবে গঠিত হয় যা একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের মস্তিস্কের সমরুপ। গর্ভধারনের শুরুতে নতুন নিউরন তৈরিতে বিভিন্ন কোষ মিলিত হয়ে টিস্যু গঠন করে যা স্নায়বিক তাড়না প্রেরণ ও গ্রহণ করে এবং মাইলিন দিয়ে অ্যাক্সন (Axons- স্নায়ুকোষ লম্বা সুতোর মতো যে অঙ্গের মাধ্যমে কোষ থেকে স্পন্দন পরিবাহিত হয়) আবৃত করতে ফ্যাটি পদার্থ প্রয়োজন যা স্নায়ু তাড়নার গতি বৃদ্ধি করে এবং এক কোষ হতে অন্য কোষে পরিবাহিত হয়।
এই সময়ে পুষ্টি উপাদান মস্তিস্কের সিনাপসেস (Synapses) গঠনে সহায়তা করে যা শিশুর কোন কিছু শেখার ক্ষমতার প্রধান উপাদান হিসাবে কাজ করে। যখন একজন গর্ভবতী মায়ের খাদ্য তালিকায় পর্যাপ্ত ক্যালরি, আমিষ, ফ্যাটি অ্যাসিডসহ অন্যান্য অনুপুষ্টি উপাদানের অভাব হয় তখন স্বায়ুযন্ত্রের বৃদ্ধি ও উন্নয়নের প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্থ হতে পারে।
শিশুর মেধা বিকাশে ১০০০ দিনের মূল পুষ্টি উপাদানসমূহ:
ভিটামিন-এ:
কাজ:
- দৃষ্টি শক্তি বজায় রাখে
- কোষের বৃদ্ধি ও আলাদা করতে সাহায্য করে
- হৃৎপিন্ড, ফুসফুস, কিডনী ও অন্যান্য অঙ্গের স্বাভাবিক গঠনে প্রধান ভূমিকা পালন করে
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
অভাবজনিত সমস্যা:
- দৃষ্টি শক্তি নষ্ট হতে পারে
- শিশুর বৃদ্ধি কম হতে পারে
- শিশুর খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমতে পারে
- সহজেই বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বাড়তে পারে
খাদ্য উৎস:
ডিমের কুসুম, হলুদ ও গাঢ় সবুজ শাক-সবজি, মিষ্টি কুমড়া, পাকা আম, মিষ্টি আলু, ব্রোকলি, কলিজা, গাজর ইত্যাদি
ভিটামিন-বি৬ (Pyridoxine):
কাজ:
- মস্তিস্কের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও কার্যক্ষমতারজন্য অপরিহার্য
- মস্তিস্কের নিউরোট্রান্সমিটারের বৃদ্ধিতেসহায়তা করে
- একস্নায়ু কোষ হতে অন্য স্নায়ু কোষে সংকেত পাঠাতে যে রাসায়নিক পদার্থের প্রয়োজন তা সরবরাহ করে
- সেরোটনিন এবং নরপিনেফরিন হরমোন
অভাবজনিত সমস্যা
- পেশী দুর্বলতা অনুভব
- সবসময় বিরক্তি প্রকাশ
- বিষন্নতা
- সবসময় অমনযোগী হওয়া
খাদ্য উৎস:
মাংস, কলিজা, আলু, কলা, স্টার্চ জাতীয় সবজি ইত্যাদি
ভিটামিন-বি১২ (Cobalamin):
কাজ:
- কোষের স্বাস্থ্য ঠিক রাখে
- উঘঅ তৈরিতে সাহায্য করে
- সকল কোষে জেনেটিক পদার্থসমূহসরবরাহ করে
- ফলিক অ্যাসিডের সাথে মিলিত হয়ে লোহিত রক্ত কণিকা তৈরি করে এবং শরীরে আয়রণের কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়
অভাবজনিত সমস্যা
- জন্মগত ক্রটির ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। যেমন: ব্রেনের নিউরাল টিউবেরক্রটি
- নিধারিত সময়ের পূর্বে বাচ্চা প্রসবে ভূমিকা রাখে
খাদ্য উৎস:
গরুর কলিজা, ভেড়ার কলিজা, মাংস, মাছ, পোল্ট্রি, ডিম, দুধ ও পনির
ক্যালসিয়াম যুক্ত খাবার:
কাজ:
- হাঁড়ের গঠন ও বৃদ্ধিতে সাহায্য করে
- দাঁতের গঠন ও বৃদ্ধিতে সাহায্য করে
- সুস্থ্য স্নায়ু ও পেশী কোষের রক্ষণাবেক্ষণে সাহায্য করে
অভাবজনিত সমস্যা
- রিকেটস হওয়ার সম্ভাবনাবাড়তে পারে
- হাঁড়ের সংযোগস্থলের বৃদ্ধিকমে যেতে পারে এবংফুলে যেতে পারে
- হাঁড়ের ভঙ্গুরতার ঝুঁকিবাড়তে পারে।
খাদ্য উৎস:
দুধ, পনির, দই এবং অন্যান্য দুগ্ধজাতীয় খাবার, ছোট মাছ ইত্যাদি
কলিন (Choline):
কাজ:
- কোষ ঝিল্লি তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান
- সকল কোষের স্বাভাবিক কাজ বজায় রাখতে সাহায্য করে
- গর্ভকালীন সময়ে শিশুর মস্তিস্ক বিকাশে সাহায্য করে
- কোলিনের অভাবে নিউরাল টিউব বন্ধ থাকে এবং শিশুর স্মরণশক্তি ও মেধা বিকাশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে
অভাবজনিত সমস্যা
- ভ্রুণ বা ফিটাস অবস্থায় শিশুর মস্তিস্কে রক্ত শিরার বৃদ্ধি কমে যেতে পারে
- শিশুর মস্তিস্ক ও স্পাইনাল কর্ডে সমস্যা/ ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়
- শিশুর স্নায়ু ও পেশী তৈরিতে সমস্যা হতে পারে
- ফোলেট এর অভাব সৃষ্টি করতে পারে
খাদ্য উৎস:
মাংস, সামুদ্রিক খাবার, কলিজা, ডিমের কুসুম, ব্রোকোলি এবং মায়ের বুকের দুধ
কপার (Copper):
কাজ:
- খুবই অল্প পরিমাণে প্রয়োজন হয়
- হাঁড়, মস্তিস্ক, হৃৎপিন্ড এবং শিশুর অন্যান্য অঙ্গসমূহের সঠিক গঠন ও বৃদ্ধিতে সহায়তা করে
- আয়রনের সাথে যুক্ত হয়ে লোহিত রক্ত কণিকা তৈরি করে
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
অভাবজনিত সমস্যা
- কম ওজনের শিশু জন্মের ঝুঁকি বাড়ায়
- পেশী দূর্বলতা,স্নায়ুবিক (Neurological) সমস্যা, রক্তস্বল্পতা, কম উচ্চতা, বিপাকীয় সমস্যা ও সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়
খাদ্য উৎস:
কলিজা, ডাল ও অন্যান্য শীম জাতীয় খাবার, বাদাম, আস্ত দানা জাতীয় খাবার, গাঢ় সবুজ শাকসবজি
ভিটামিন-সি:
কাজ:
- কোলাজেন নামক আমিষ তৈরিতে সাহায্য করে, যা শিশুর হাঁড়, পেশী এবং অন্যান্য সংযোজক কলা (Connective Tissue) গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
- আয়রন পরিশোষণ বৃদ্ধি করে
অভাবজনিত সমস্যা
- শিশুর স্কার্ভি হতে পারে
- হাঁড়ের বৃদ্ধি কমে যেতে পারে
- রক্তক্ষরণ
- রক্তস্বল্পতা
- শিশুর দাঁতের মাড়ি হতে রক্তক্ষরণ
খাদ্য উৎস:
সাইট্রাস জাতীয় ফল, টমেটো, লাল ও সবুজ মরিচ, ব্রোকোলি, আলু
ভিটামিন-ডি:
কাজ:
- শিশুর হাঁড়ের বৃদ্ধি ও স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ
- মা ও শিশুর রোগ প্রতিরোধ পদ্ধতি বজায় রাখে
- ক্যালসিয়াম পরিশোষণে সাহায্য করে
অভাবজনিত সমস্যা
- শিশুর হাঁড় সরু, ভঙ্গুর বা অন্য কোন অসামঞ্জস্যতা হতে পারে
- শিশুর রিকেটস রোগ হতে পারে
- হাঁড়ের সন্ধিস্থলসমূহের যথাযথ বৃদ্ধি ব্যাহত ও ফুলে যেতে পারে
খাদ্য উৎস:
সূর্যের আলো, ডিমের কুসুম, কলিজা, মায়ের বুকের দুধ
ফোলেট (Folate):
কাজ:
- শিশুর মস্তিস্ক ও স্পাইনাল কর্ডের যথাযথ বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ
- কোষ বিভাজনে সাহায্য করে
- রক্তকণিকার বৃদ্ধি ও উন্নয়নে সাহায্য করে
অভাবজনিত সমস্যা
- শিশুর নিউরাল টিউবের অসামঞ্জস্যতা সংক্রান্ত ঝুঁকি বৃদ্ধি (এক ধরনের জন্মগত সমস্যা। এতে স্পাইনাল কর্ড ঠিকমত গঠন হয় না, যা শিশুর কোন কিছু শেখার ক্ষমতা হ্রাস করে)
খাদ্য উৎস:
সবুজ কচু, শাক, পুঁইশাক, শীমজাতীয় খাবার, কলা, আম, তরমুজ, গরুর কলিজা, ইলিশ মাছ, কাতল মাছ, চিংড়ি
আয়রন (Iron ):
কাজ:
- শিশুর সঠিক মস্তিস্ক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ
- শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের টিস্যুসমূহে অক্সিজেন সরবরাহ করে
- শিশুর বিভিন্ন ধরনের জৈবিক কাজ ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
অভাবজনিত সমস্যা
- চরম অবসাদ ও বিষণœতা
- মেধা বিকাশ না হওয়া
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়
খাদ্য উৎস:
গরুর প্লীহা, ভেড়ার প্লীহা, ছাগলের প্লীহা, গরুর কলিজা, মুরগীর কলিজা, ছাগলের কলিজা, পাটশাক, ডাটাশাক, লালশাক, সবুজ কচু শাক,লাউশাক, মাছের ডিম, শিংজাতীয় মাছ, তেলাপিয়া, ডাল, তেঁতুল, আমড়া, শুকনা খেজুর, পাকা তাল ইত্যাদি
আয়োডিন (Iodine ):
কাজ:
- শিশুর মেধা বিকাশে সাহায্য করে
- থাইরয়েড (Thyroid) হরমোনের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান
অভাবজনিত সমস্যা
- মস্তিস্কের সঠিক বৃদ্ধি ও বিকাশ না হওয়া
খাদ্য উৎস:
আয়োডিন সমৃদ্ধ লবণ, দুগ্ধজাতীয় খাদ্য, ডিম, সামুদ্রিক মাছ
ভিটামিন-কে (Vitamin K):
কাজ:
- রক্ত জমাট বাধতে সাহায্য করে
- অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ প্রতিরোধ করে
অভাবজনিত সমস্যা
- অনিয়ন্ত্রিত রক্তক্ষরণের ঝুঁকি বাড়ায়
- শিশুর বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের যথাযথভাবে কাজ না করা
- মেধা বিকাশে সমস্যা হওয়া
- জন্মকালীন সময়ে শরীরের অঙ্গ- প্রত্যঙ্গসমূহের যথাযথভাবে
খাদ্য উৎস:
পালং শাক, ব্রোকলি, কলিজা, বাঁধাকপি, লেটুস
লম্বা শিকলযুক্ত পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড:
কাজ:
- এই চর্বি বিশেষ করে ডিএইচএ ((DHA-Docosapentaenic Acid)) শিশুর স্বাস্থ্য ও মেধা বিকাশে মুখ্য ভূমিকা পালন করে
- ডিএইচএ (DHADocosapentaenic Acid) চোখ ও মস্তিস্কের টিস্যুর প্রধান উপাদান
- সুস্থ্য কোষ ঝিল্লি তৈরি ও বৃদ্ধিতেসাহায্য করে
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
অভাবজনিত সমস্যা
- শিশুর ওজন কম হয়
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়
- শিশুর কোন বিষয়ে মনযোগের ব্যপ্তি কম হয়
- শিশু হাইপারএকটিভ (ঐুঢ়বৎধপঃরাব) বা সহজে বিরক্ত হয়
- কোন কিছু সহজে শিখতে সমস্যা হয়
খাদ্য উৎস:
বিভিন্ন ধরনের মাছ, বাদাম, মায়ের বুকের দুধ
আমিষ জাতীয় খাবার:
কাজ:
- শরীরের সকল কোষ, পেশীর টিস্যু, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, মস্তিস্কের নিউরোট্রান্সমিটারের((Neurotransmitter) ) গুরুত্বপূর্ণ উপাদান
- মস্তিস্কের সঠিক বৃদ্ধিতে সাহায্য করে
- শরীরের বিভিন্ন জৈবিক কাজ বজায় রাখতে সাহায্য করে
অভাবজনিত সমস্যা
- বিষন্নতা
- সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়া
- পেশী দুর্বলতা
খাদ্য উৎস:
মাছ, মাংস, দুধ, ডিম, ডালজাতীয় খাবার, শীমজাতীয় খাবার, বিভিন্ন ধরনের বাদাম, দুগ্ধজাত খাদ্য
সেলেনিয়াম:
কাজ:
- খুব অল্প পরিমাণে প্রয়োজন হয়
- শরীরে থাইরয়েড (Thyroid) হরমনের বিপাক ও ডিএনএ সংশ্লেষণে (DNA Synthesis) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে
- মস্তিস্কের স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য
- রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা উন্নয়নে গুরুত্বপূণ
অভাবজনিত সমস্যা
- শিশুর বৃদ্ধি ব্যাহত হয়
খাদ্য উৎস:
ডিম, গরুর মাংস, মুরগীর মাংস, সামুদ্রিক খাবার
জিঙ্ক (zinc ):
কাজ:
- কোষের বৃদ্ধি ও বিপাকে অপরিহার্য
- শরীরের বৃদ্ধি ঠিক রাখে
- মস্তিস্কের কার্যক্ষমতা বজায় রাখে
- রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা বজায় রাখে
- হাঁড়ের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে
অভাবজনিত সমস্যা
- গর্ভকালীন সময়ে শিশুর নড়াচড়া ও হৃৎস্পন্দনে অসামঞ্জস্যতা দেখা যেতে পারে
- নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই শিশুর জন্ম হতে পারে
- রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে বৃদ্ধি ব্যাহত হয়
খাদ্য উৎস:
মাংস, আস্ত দানাজাতীয় খাদ্য, দুধ ও দুগ্ধজাতীয় খাদ্য