ন্যাপ্রোক্সেন – Naproxen ওষুধের কাজ কি ? এর ব্যবহার।

| |

ন্যাপ্রোক্সেন –  Naproxen সোডিয়াম ইউএসপি ব্যবহার করা হয় বাতজনিত রোগ যেমন তীব্র বাত ও দীর্ঘস্থায়ী বাত এর সমস্যার জন্য। এছাড়াও এটি অস্থি সংশ্লিষ্ট ব্যথা, বাতজনিত তীব্র ব্যথা, পেশীর ব্যথা, মাইগ্রেনের ব্যথা ও মাসিকের সময় ব্যথা ।

ন্যাপ্রোক্সেন- Naproxen সোডিয়াম ইউএসপি উপাদান:

ন্যাপ্রোক্সেন- Naproxen ২৫০ ট্যাবলেট: 

প্রতিটি এন্টেরিক কোটেড  ট্যাবলেটে আছে ন্যাপ্রোক্সেন সোডিয়াম ইউএসপি  যা ন্যাপ্রোক্সেন ইউএসপি ২৫০ মি. গ্রা.-এর সমতুল্য ।

ন্যাপ্রোক্সেন- Naproxen ৫০০ ট্যাবলেট:

প্রতিটি এন্টেরিক কোটেড ট্যাবলেটে আছে সোডিয়াম ইউএসপি  যা ন্যাপ্রোক্সেন ইউএসপি ৫০০মি. গ্রা.-এর সমতুল্য ।

ন্যাপ্রোক্সেন একটি নন-স্টেরয়ডাল প্রদাহরোধী ওষুধ । ইহা প্রোস্টাগ্র্যানডিন উৎপাদন বাধা প্রদান করে প্রদাহরোধী , জ্বর  নিবারণ ও ব্যথা প্রশমন কার্যক্ষমতা প্রদর্শন করে। 

ন্যাপ্রোক্সেন সোডিয়াম ও ন্যাপ্রোক্সেন উভয়ই পরিপাকতন্ত্রের সম্পর্ণ বিশোষিত হয় । কিন্তু রক্তে সর্বোচ মাত্রায় পৌঁছাতে ন্যাপ্রোক্সেন সোডিয়ামের ১-২ ঘন্টা সময় লাগে আর ন্যাপ্রোক্সেন ২-৪ ঘন্টা সময় লাগে।

ন্যাপ্রোক্সেন ওষুধের কাজ কি?

বাত জনিত রোগ তীব্র ব্যাট ও ধীর্ঘস্থায়ী ব্যাট এর চিকিৎসায় নির্দেশিত। এছাড়া ইহা অস্থি সংশ্লিষ্ট ব্যথা , এনকোলাইজিং স্পন্ডেলাইটিস , জুভেনাইল রিউমাটয়েড আর্থাইটিস , টেনডাইনিটিস , বারসাইটিস , পেশির প্রদাহ, মাইগ্রেনের ব্যথা ও ডিসমেনোরিয়ায় নির্দেশিত।

রিউমাটয়েড আর্থাইটিস, অস্টিও-আরথাইটিস ও এনকাইলোজিং স্পনডেলাইটিস: ২৫০-৫০০ মি গ্রা. করে দিনে দুই বার যা অল্প করেকদিনের জন্য ১.৫ গ্রাম পর্যন্ত বাড়ানো যেতে পারে। মাত্রা সকালে এবং রাতে সমান হতে হবে তার কোন বাধ্যবাধকতা নেই। দিনে দুইবারের বেশী ইহা নির্দেশিত নয়। সাধারণত: দুই সপ্তাহের নধ্যে উপসর্গ সমুহের উন্নতি পরিলক্ষিত হয় । যদি তা না হয় তবে অতিরিক্ত দুই সপ্তাহের জন্য ব্যবহার করতে হবে। 

মৃদু থেকে মাঝারী ব্যথা, ডিস্মেনোরিয়া, তীব্র টেনডাইনিটিস ও বারসাইটিস: ৫০০ মি গ্রা প্রাথমিকভাবে, এরপর ২৫০ মি. গ্রা. ৬-৮ ঘণ্টা পর পর প্রয়োজন অনুসারে, তবে প্রতিদিন ১.৩৭৫ গ্রাম মাত্রা অতিক্রম করা উচিৎ নয় । 

তীব্র বাত: প্রাথমিকভাবে ৭৫০ মি গ্রা এরপর  ২৫০ মি-গ্রা. প্রতি ৮ ঘণ্টা পর পর যতক্ষণ উপসর্গ পরিলক্ষিত হয় । 

জুভেনাইল আর্থাইটিস (পাচ বছরের উর্ধে শিশুদের ক্ষেত্রে): প্রতি কেজি ওজনের জন্য ১০ মি গ্রা. করে প্রতিদিন দুই বিভক্ত মাত্রায় নির্দেশিত |

জেল : প্রয়োজন অনুযায়ী দিনে ২ থেকে ৬ বার। শিশুদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাবে না।

তাছাড়া জ্বর, মাথা ব্যথা, গাঁটে ব্যথা, পেশীতে ব্যথা, অস্টিও আর্থ্রাইটিস,  রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিস, স্পন্ডালাইটিস  গাউট, হাঁটুর ব্যথা, কব্জিতে ব্যথা, পায়ে ব্যথা, চিকুনগুনিয়া, বারসাইটিস, পিঠের ব্যথা, স্লিপ ডিস্ক, পা ব্যথা, সায়াটিকা, গোড়ালিতে ফ্র্যাকচার, হাড় ফ্র্যাকচার, বুকের হাড় ভাঙা, কলার বোন ফ্র্যাকচার, কনুই ভাঙা, আই সকেট ফ্র্যাকচার, আঙুল ভাঙা, পা ভাঙা, হাত ভাঙা, কোমর ভাঙা, চোয়াল ভাঙা, ও মাসিকের সময় ব্যথা ইত্যাদি জরুরি রোগে ব্যবহার করা হয় ।

সতর্কতা ও যেসব ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাবে না:

যকৃত, হৃদপিন্ড ও মূত্রতন্ত্রের সমস্যা এবং যাদের রক্ত জমাট সংক্রান্ত সমস্যা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে ন্যাপ্রোক্সেন সাবধানতার সাথে ব্যবহার করতে হবে। এছাড়া যাদের আন্ত্রিক সমস্যা রয়েছে ।

আলসার রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে সাবধানতার প্রয়োজন । এসপিরিন বা অন্যান্য নন-স্টেরয়ডাল প্রদাহরোধী ওষুধের প্রতি সংবেদনশীলতা , বিশেষভাবে যেসব রোগী যাদের এ সকল সমস্যা রয়েছে। 

ওসব ব্যবহারের ফলে এ্যাজমা, আর্টিকেরিয়া, রাইনাইটিস , এনজিওইডিমা ইত্যাদি পরিলক্ষিত হয় তাদের ক্ষেত্রে ইহা ব্যবহার করা যাবে না।

এসিই ইনহিবিটর বাবহারকারীদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করলে মুত্র রোগ দেখা দিতে পারে। যেহেতু ন্যাপ্রোক্সেন আ্যানায়নের প্রোটিনের প্রতি প্রচন্ড আসক্তি রয়েছে। তাই এর  ফলে যেসব ড্রাগ এলবুমিনের সাথে যুক্ত হয় তারা বিমুক্ত হতে পারে |

আরো দেখুনঃ   ইসোমিপ্রাজল - Esomeprazole এর কাজ কি ? ইসোমিপ্রাজল খাওয়ার নিয়ম

ন্যাপ্রোক্সেন কুমারিন জাতীয় আন্টিকোয়াগুলেন্ট হাইডেনটইন, সালফোনাইল ইউরিয়া ও সালফোনামাইডের সাথে সাবধানতার সাথে ব্যাবহার করা উচিত। এছাড়া প্রোপ্রানোলল ও বিটা- ব্লকার এর কার্যকারিতা কমিয়ে দেবার প্রবনতা ন্যাপ্রোক্সেনের ক্ষেত্রে পরিলক্ষিত হয়। মিথোট্রেক্সেট ও প্রোবেনেসিড এর সাথে সম্ভাব্য বিষক্রিয়া এড়ানোর জন্য এর ব্যবহার অত্যন্ত সাবধানতার সাথে করা উচিত ।

ন্যাপ্রোক্সেন – Naproxen ঔষধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া:

আন্ত্রিক : বমিভাব, ডায়রিয়া ও আন্ত্রিক আলসার ।

সংবেদনশিল: শ্বাসকষ্ট, এঞ্জিওইডিমা, চাকা চাকা দাগ হওয়া ।

স্নায়ুবিক: ঝিমুনি, মাথা ব্যাথা, মাথা ঘোরা, টিনিটাস, আলো সংবেদনশীলতা ।

এছাড়াও জন্ডিস, মুত্র তন্ত্রের সমস্যা ও থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া হতে পারে, যদিও এর পরিমান অত্যন্ত নগণ্য ।

গর্ভবতী ও ত্তন্যদায়ী মায়েদের ক্ষেত্রে ব্যবহার: 

গর্ভবতী মাহিলাদের ক্ষেত্র ন্যাপোক্সেন ব্যবহারের যথেষ্ট ক্লিনিক্যাল তথ্য নেই। এক্ষেত্রে ইহা ব্যবহার করা উচিত নয়। প্রোস্টাগ্রানডিন উৎপাদনে বাধা প্রদানকারী ওষুধ সমূহ ব্যবহারের ফলে নবজাতকের বিভিন্ন পার্শ প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে, তাই স্তন্যদায়ী মায়েদের জন্য ইহা নির্দেশিত নয়

Previous

ইসোমিপ্রাজল – Esomeprazole এর কাজ কি ? ইসোমিপ্রাজল খাওয়ার নিয়ম

কুমড়ো বড়ি দিয়ে আলু সয়াবিন রসা

Next

Leave a Comment